বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রতিবছর এদেশে নানারকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো টর্নেডো ও ঘূর্ণিঝড়। এগুলো কোনো কোনো সময় এত ভয়াবহরূপে আঘাত হানে যে, এতে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে থাকে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খ্রিষ্টভক্ত হিসেবে আমরা আমাদের কর্তব্যগুলো জানব ।
দেশের যেকোনো স্থানে ঘটতে পারে । টর্নেডোর আঘাতে বাড়িঘর, গাছপালা, ফসলাদি সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যায়। এতে অনেক মানুষ আহত ও নিহত হয়। ঘূর্ণিঝড়গুলো সাধারণত ঘটে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে, উপকূলীয় এলাকায়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রের পানি ফুলে অনেক উঁচু হয়ে যায়। ঝোড়ো বাতাস ও পানি একত্রে আঘাত হানে। ঘরবাড়ি, গাছপালা, জমির ফসল ধ্বংস হয়ে যায়। সমুদ্রের লোনা পানিতে ডুবে বহু লোকের মৃত্যু ঘটে থাকে। এসব দুর্যোগের সময় আমরা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরকে সহায়তা করতে পারি সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব।
১। সহজে যোগাযোগ করা যায় এমন কয়েকটি জরুরি ফোন নম্বর সংগ্রহ করা।
২। সবচেয়ে শক্ত ঘর অর্থাৎ বাতাসে উড়ে যাবার সম্ভাবনা কম এমন ঘরটিকে বেছে নিয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া ৷
৩। একটি ব্যাগে জরুরি কিছু জিনিসপত্র, যেমন-প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু সরঞ্জাম ও ঔষধপত্র, টর্চলাইট, বাড়তি ব্যাটারিসহ ছোট একটা রেডিও, মোমবাতি, দিয়াশলাই, প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট ও দলিলপত্র, কিছু শুকনা খাবার সংগ্রহ করা।
৪। নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করা, সবসময় টেলিভিশন বা রেডিওতে খবর শোনা ও সরকারি নির্দেশ অনুসরণ করা।
৫। ঘরের চাল যথেষ্ট শক্ত করে খুঁটির সাথে বাঁধা আছে কি না তা দেখা ।
৬। বাড়ির বাইরে এখানে-ওখানে কোনো টিন বা এরকম কোনো আলগা জিনিসপত্র যেন না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখা। কারণ সেগুলো বাতাসে উড়ে গিয়ে কারো গায়ে লেগে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
৭। গরুবাছুর, হাঁস মুরগি ইত্যাদি গবাদিপশুর জন্য আগেই কোনো ব্যবস্থা করে রাখা।
৮। যথেষ্ট পানি ধরে রাখা, যেন পরে খাবার পানি সরবরাহ করা না হলেও ঘরে পানির অভাব না থাকে ।
৯। যথেষ্ট পরিমাণ নগদ টাকা হাতে রাখা ।
১০। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন বন্ধ করে দেওয়া।
১১। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত নিশ্চিত হলে বাড়ির সবাইকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া ৷
১। বাড়ির সব সদস্য যেন ঘরের ভিতরে থাকে সেদিকে লক্ষ রাখা।
২। প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের কাছে রাখা ।
৩। রেডিও বা টেলিভিশনের নির্দেশনা শুনতে থাকা ।
৪। প্রার্থনা করতে থাকা, যেন ঈশ্বর এই বিপদ থেকে সকলকে রক্ষা করেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের কোনো হাত নেই, একথা সত্য। কিন্তু দুর্যোগকবলিত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার ব্যাপারে তো কোনো বাধা নেই। বরং নির্দেশনা আছে যেন মানুষ পরস্পরের সহায়তায় এগিয়ে যায়। এখানে আমরা স্মরণ করতে পারি প্রতিবেশী সম্পর্কে প্রভু যীশুর শিক্ষার কথা। বিদেশি হয়ে সামারীয় (শমরীয়) যে- লোক আহত লোকটিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল সে-ই প্রকৃত প্রতিবেশী। আমরাও যদি দুর্যোগপূর্ণ সময়ে দুর্যোগকবলিত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসি তখন আমরা তাদের প্রতিবেশী হয়ে উঠি। কিন্তু তাদের প্রয়োজন দেখেও যদি কিছু না করি তবে আমরা খ্রিষ্টীয় আচরণ করি না। এখানে আমরা আরও স্মরণ করতে পারি যীশুর সেই কথাগুলো: আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে খাদ্য দিয়েছ; যখন তৃষ্ণার্ত ছিলাম, আমাকে জল দিয়েছ; যখন বস্ত্রহীন ছিলাম, তখন আমাকে বস্ত্র দিয়েছ ইত্যাদি। কাজেই দুর্যোগ কবলিত আশ্রয়হীন, বস্ত্রহীন, ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত, রোগপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন খ্রিষ্টানের অবশ্যকরণীয়।
১। ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে তা বিতরণের ব্যবস্থা করা।
২। যদি কেউ নিহত হয়ে থাকে তার সৎকারের ব্যবস্থা করা।
৩। আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া।
৪। বিপন্ন মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়স্থানে নিয়ে যাওয়া ও তাদের খাদ্য, বস্ত্র ও বিশুদ্ধ পানীয়ের ব্যবস্থা করা ৷
৫। মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিনিয়ত পরামর্শ প্রদান করা ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের হাত নেই। দুর্যোগপূর্ণ সময়ে মানুষের পাশে থাকা আমাদের খ্রিষ্টীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য।
দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে একজন খ্রিষ্টভক্ত হিসেবে ব্যক্তিগত ও সমবেতভাবে কী কী করতে পার তা লেখ ।
ক) বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক ___ দেশ।
খ) ঘূর্ণিঝড়ের সময় ___ পানি ফুলে অনেক উঁচু হয়ে যায়।
গ) ঘূর্ণিঝড় সাধারণত ঘটে দেশের ___।
ঘ) নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য ___ করা।
ঙ) বিদ্যুৎ ও ___ লাইন বন্ধ করে দেওয়া।
ক) প্রতিবছর এদেশে নানারকম | ক) নগদ টাকা হাতে রাখা। |
খ) টর্নেডোর আঘাতে বাড়িঘর গাছপালা | খ) নির্দেশনা শুনতে থাকা । |
গ) যথেষ্ট পরিমাণ | গ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। |
ঘ) রেডিও বা টেলিভিশনে | ঘ) ফসলাদি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। |
ঙ) প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো | ঙ) জনগণকে যথেষ্ট সতর্ক করা হয়েছিল। |
চ) হাতের কাছে রাখা । |
ক) দুর্যোগের সময় খ্রিষ্টের শিক্ষা অনুসারে কী করণীয়?
খ) ঘূর্ণিঝড়ের পরে করণীয় কী?
গ) প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে অন্যতম দুইটি দুর্যোগের নাম লেখ ।
ক) ঘূর্ণিঝড়ের আগে আমাদের করণীয় কী কী লেখ।
খ) টর্নেডোর সময় কী কী করবে?
আরও দেখুন...